,

প্রাণ ফিরে পেয়েছে হবিগঞ্জের চা বাগানগুলো

স্টাফ রিপোর্টার : টানা ১৯ দিন আন্দোলনের পর মজুরি নিয়ে সমস্যার অবসান হওয়ায় হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগানে পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই জেলার বাগানগুলোতে কাজে যোগ দিয়ে পাতা উত্তোলন শুরু করেন তারা। এতে আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে চা বাগানগুলো।
চান্দপুর চা বাগানের শ্রমিক ও নারীনেত্রী সন্ধ্যা রাণী ভৌমিক বলেন, ১৬ দিন পরে বাগানে ফিরে খুব ভালো লাগছে। তবে পাতার অবস্থা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে। যে পাতা গুলো আড়াই কুড়ি হলে তোলা হয় সেই পাতায় এখন ২০ থেকে ২২ কুড়ি হয়েছে। এখন যেগুলো বয়স বেশি হয়েছে ওই পাতাগুলো ফেলে দিতে হবে।
তিনি বলেন, এই চা পাতায় আমার ভালোবাসা আর আবেগ। বাংলাদেশে চা শিল্প ঠিকিয়ে রাখাটা আমাদের জরুরি। যেহেতু এখন চায়ের ভরা মৌসুম আমরা একটু কষ্ট হলেও দ্রুত পাতা উত্তোলনের চেষ্টা করবো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, তিনি এমন উদ্যোগ না নিলে এখনও সেই আন্দোলন শেষ হতো না।
মিনতি বাউরি বলেন, টানা ১৬ দিন পর বাগানে ফিরে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। এর আগে একটানা এতদিন বাগানের বাইরে ছিলাম না? এতদিন কাজ করতে না পেরে নিজে নিজে খুব কষ্ট পেয়েছি কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারিনি। এখন যাতে সব কিছু আগের মতো ফিরেয়ে আনা যায় সেই চেষ্টা করছি।
সুমতি বাগতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কারণে আমরা আবার কাজে ফিরতে পেরেছি। আমাদের মা আবার আমাদের কাজে ফেরার ব্যবস্থা করেছেন। ১৭০ টাকায় আমরা এখন মোটামুটি ভালো করে চলতে পারবো।
অঞ্জন গোয়ালা নামের আরও এক শ্রমিক বলেন, এতদিন পর ফ্যাক্টরিতে ফিরে দেখি সব কিছু এলোমেলো? মেশিনে ধুলোময়লা পরেছে। চা পাতাগুলো নষ্ট হয়ে পরে আছে। এগুলো দেখে নিজের কাছে খুব খারাপ লেগেছে? সকালে এসেই আগে সবকিছু পরিষ্কার করেছি। এখন কাজ শুরু করবো। একটানা কাজ করবো।
প্রসঙ্গত, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ আগস্ট আন্দোলনে নামেন হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৪টি চা বাগানের শ্রমিকসহ দেশের ১৬৬ চা বাগানের শ্রমিকরা। দিনে দু’ঘণ্টা করে টানা চারদিন পালন করা হয় কর্মবিরতি। এরপর ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুরোদমে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন চা শ্রমিকরা।
পরে ১৯ আগস্ট রাতে মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার বিষয়ে একটি চুক্তি হলেও সেটি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান শ্রমিকরা। কয়েক দফা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে থাকা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করতে থাকেন। অবশেষে তাদের মজুরি ১৭০ টাকা করা হলে কাজে ফেরেন তারা।


     এই বিভাগের আরো খবর